Inathganjbarta দৈনিক ইনাতগঞ্জ বার্তা

Main Menu

  • হোম পেজ
  • সারা বাংলাদেশ
  • সিলেট বিভাগ
  • মৌলভীবাজার জেলা
  • সুনামগঞ্জ জেলা
  • হবিগঞ্জ জেলা
  • আইন আদালত
  • মতামত
  • খেলাধুলা
  • আমাদের পরিবার
  • Copyright Policy
  • Terms & Conditions
  • Privacy Policy
  • Contact Us
  • About Us

Inathganjbarta দৈনিক ইনাতগঞ্জ বার্তা

Inathganjbarta দৈনিক ইনাতগঞ্জ বার্তা

  • হোম পেজ
  • সারা বাংলাদেশ
  • সিলেট বিভাগ
  • মৌলভীবাজার জেলা
  • সুনামগঞ্জ জেলা
  • হবিগঞ্জ জেলা
  • আইন আদালত
  • মতামত
  • খেলাধুলা
  • আমাদের পরিবার
  • Copyright Policy
  • Terms & Conditions
  • Privacy Policy
  • Contact Us
  • About Us
আন্তর্জাতিক
Home›আন্তর্জাতিক›ট্রাম্পের অভিষেক : পাল্টে যেতে পারে বিশ্ব সমীকরণ

ট্রাম্পের অভিষেক : পাল্টে যেতে পারে বিশ্ব সমীকরণ

By ইকবাল তালুকদার
January 21, 2025
72
0
Share:

আন্তর্জাতিক ডেস্ক।। দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউসে ফিরলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৈশ্বিক রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার অঙ্গীকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় দুপুরে (বাংলাদেশ সময় রাত ১১টার দিকে) শপথ গ্রহণ করেন তিনি। ক্যাপিটল হিল ভবনের ভেতরের একটি কক্ষে তিনি শপথ নেন। শপথ নেওয়ার পর ট্রাম্প বলেছেন, ‘তার ক্ষমতা গ্রহণের মধ্য দিয়ে আমেরিকা নতুন স্বর্ণ যুগে পা দিয়েছে। আমেরিকার স্বর্ণ যুগ এখনই শুরু হয়েছে। এখন থেকে সামনের দিনগুলোয় আমাদের দেশ আরও সমৃদ্ধ আর সম্মানজনক অবস্থানে উঠে আসবে। আমার একমাত্র লক্ষ্য হবে, আমেরিকা ফার্স্ট।

 

এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন মেয়াদের শুরুতে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বার্তায় জানায়, ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় প্রধান উপদেষ্টা তাকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন। বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা দৃঢ় বিশ্বাস ব্যক্ত করে বলেছেন, সহযোগিতার নতুন নতুন ক্ষেত্র উন্মোচনের জন্য দুই দেশ কাজ করবে।

 

৪০ বছর আগে ১৯৮৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে রোনাল্ড রিগ্যান ক্যাপিটলের অভ্যন্তরে শপথ নেন। তখনো তীব্র ঠাণ্ডার কারণে শপথ অনুষ্ঠান ক্যাপিটলের ভেতরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

 

এদিকে শপথের আগে ট্রাম্প বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ট্রাম্প ২০১৬ সালে প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তখন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নারী প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে থাকা হিলারি ক্লিনটনকে পরাজিত করেন। এবারও তিনি নারী প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

 

 

ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে অন্যদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ছিলেন ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী ও সদ্য বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। আরও উপস্থিত ছিলেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, সাবেক ফার্স্ট লেডি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ও সাবেক ফার্স্ট লেডি লরা বুশ এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। উপস্থিত ছিলেন ট্রাম্পের স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।

 

দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার পর ভাষণে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধারের অঙ্গীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধার করা হবে, আমাদের নিরাপত্তা পুনরুদ্ধার করা হবে, পুনরায় ন্যায়বিচার ফিরিয়ে আনা হবে। আমরা একটি গর্বিত, সমৃদ্ধিশালী ও স্বাধীন জাতি তৈরি করার লক্ষ্যকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেব।’

 

ভাষণে পানামা খাল প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেছেন, ‘এটা এমন একটা বোকা উপহার, যা আমাদের কখনো তৈরি করাই উচিত হয়নি।’ পানামা খাল চীনারা পরিচালনা করছে বলে ভুল অভিযোগ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ‘আমরা এটা চীনকে দেইনি। আমরা আবার এটা ফিরিয়ে নেব। এই মাসের শুরুর দিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প একই দাবি করেছিলেন। সেই সময় সামরিক অভিযানের সম্ভাবনার কথাও তিনি উড়িয়ে দেননি।

 

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি বেশ কিছু নির্বাহী আদেশ জারি করতে যাচ্ছেন। তার মধ্যে রয়েছে, আমেরিকার দক্ষিণ সীমান্তে, যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে তিনি জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করবেন। অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ বন্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে যে ‘লাখ লাখ অপরাধী’ অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে, তারা যেখান থেকে এসেছে, সেখানে ফেরত পাঠানো হবে। সেই সঙ্গে তার রিমেইন ইন মেক্সিকো বা ‘মেক্সিকোতেই থাকো’ নীতি পুনরায় কার্যকর করা হবে। সীমান্ত এলাকায় আরও সৈনিক ও জনবল পাঠানো হবে বলেও তিনি ঘোষণা দিয়েছেন। মাদক চক্র বা কার্টেলগুলোকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করা হবে এসব নির্বাহী আদেশে।

 

গতকাল বাংলাদেশ সময় রাত ১১টার কিছু পরে শপথ নেন তিনি। শপথে তিনি সংবিধানকে ‘সংরক্ষণ ও রক্ষা করার’ প্রতিজ্ঞা করেন।

 

শপথ গ্রহণকালে ট্রাম্পের সামনে দুটি বাইবেল দেখা গেছে। এর মধ্যে একটি তার মায়ের দেওয়া এবং অন্যটি সাবেক যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের ব্যবহৃত বাইবেল বলে জানা যাচ্ছে।

 

ট্রাম্পের কিছুক্ষণ আগে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন রিপাবলিকান নেতা জেডি ভ্যান্স।

 

ট্রাম্পের অভিষেক ও শপথকে কেন্দ্র করে সারা বিশ্বের দৃষ্টি এখন ওয়াশিংটনের দিকে। তার দ্বিতীয় দফা অভিষেকের মধ্য দিয়ে পাল্টে যেতে পারে বিশ্ব কূটনীতির সমীকরণ। দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প কী কী পদক্ষেপ নেবেন, সেদিকে চেয়ে আছেন বিশ্ববাসী। আগামী চার বছর বিশ্ব পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে, কূটনীতির গতিপ্রকৃতি কী হবে, তা জানতে উৎসুক সবাই। ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি যুদ্ধ থামাবেন। তিনি এক দিনের মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর কথা বললেও বাস্তবে কি তা আদৌ সম্ভব হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন অনেকের মধ্যেই। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি প্রক্রিয়া সদ্য শুরু হলেও ভবিষ্যতে বন্ধু দেশ ইসরায়েলের প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন কীভাবে সাহায্যের হাত বাড়াবে সেদিকেও কড়া দৃষ্টি রাখছে পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলো।

 

কেমন হবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ

খবরে বলা হয়েছে, দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্প নির্বাহী আদেশের ‘সুনামি’ বইয়ে দেবেন। ‘বাইডেন প্রশাসনের প্রতিটি উগ্র ও নির্বোধ নির্বাহী আদেশ’ বাতিল করবেন। তার পরিকল্পনার ব্যাপারে জানা-শোনা আছে এমন একটি সূত্র বলেছে, সোমবার ট্রাম্প ২০০টির বেশি নির্বাহী পদক্ষেপ নেবেন। আরেকটি সূত্র বলেছে, ট্রাম্প প্রথম যেসব নির্বাহী আদেশ দেবেন, সেগুলোর মধ্যে সীমান্ত নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে। পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে, মাদক চক্রগুলোকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ আখ্যা দেওয়া, যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা এবং ‘মেক্সিকোতে থাকুন’ নীতি পুনর্বহালের দিকে অগ্রসর হওয়া। ট্রাম্পের বিতাড়ন পরিকল্পনাগুলো অভিবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছে।

 

কঠোর অভিবাসন নীতি

খবরে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প সবচেয়ে কঠিন ভূমিকা নেবেন অভিবাসন নীতিতে। দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ব্যবস্থার ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করবেন। ট্রাম্পের অভিবাসী নির্বাসন পরিকল্পনাকে অসম্মানজনক বলে সমালোচনা করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। ক্ষমতা গ্রহণের দিন থেকেই তিনি সোয়া কোটি অবৈধ অভিবাসীকে বহিষ্কার শুরু করবেন। তবে এর সিকিও যদি তিনি বাস্তবায়নের চেষ্টা করেন, তাহলে সারা দেশে এবং দেশের বাইরেও অভাবনীয় মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হবে। জানা গেছে, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রক্রিয়াও ট্রাম্প কঠিন করে তুলবেন বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া তার পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে বিতর্কিত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা এবং সীমান্ত নিরাপত্তা কঠোর করা। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত সহজে সব করতে পারবেন না তিনি। তার এই পরিকল্পনাগুলো আইনি, লজিস্টিক ও আর্থিক দিক থেকে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবে।

 

 

কী হবে ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি?

বিশ্লেষকরা বলছেন, আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতির ভরকেন্দ্র এবার বদলাবে। ঐতিহ্যগতভাবে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক নেতৃত্ব দান থেকে সরে ‘আমেরিকা প্রথম’ নীতিকেই গ্রহণ করবে। বিশ্লেষকদের ভাষ্য, ‘এখন আমরা সবাই সম্ভবত এক নতুন যুগের সম্মুখীন হতে চলেছি। আমেরিকা তার নিজের স্বার্থের দিকে তাকিয়ে বিদেশনীতি তৈরি করবে এবার। গোটা বিশ্বের ভালো-মন্দ নিয়ে মাথা ঘামাতে যাবে না। এবার প্রতিযোগিতা বাড়াবে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে। অন্য রাষ্ট্রের সরকার নিয়ে খুঁটিনাটি পর্যবেক্ষণ বন্ধ হবে।

 

বাংলাদেশে নিয়ে ট্রাম্পের বার্তা

ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নেওয়ার পরে ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ নীতিতে কী পরিবর্তন হবে, তা নিয়ে চর্চার শেষ নেই। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে ট্রাম্পের ‘বিশেষ পরিচিতি’ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে কী প্রভাব ফেলে, তা নিয়ে ব্যাপক কৌতূহল রয়েছে। প্রথম দফায় ট্রাম্প জেতার পরে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক দল আমেরিকান নাগরিক তাকে অভিনন্দন জানাতে গিয়েছিলেন।

 

সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বার্নিকাটসহ আমেরিকার পররাষ্ট্র দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ তিন কর্মকর্তাকে ইস্তফা দিতে বলেছে ট্রাম্পের শিবির। এই তিন কর্মকর্তাই পেশাদার কূটনীতিক এবং রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট দুই আমলেই দায়িত্বে থেকেছেন তারা। পছন্দের রাজনৈতিক লোককে বসাতেই সম্ভবত তাদের সরে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু বার্নিকাটকে সরানোর সিদ্ধান্ত ট্রাম্প শিবিরের বার্তা হিসেবে দেখছেন ওয়াকিবহাল মহল।

 

ইউক্রেন যুদ্ধে কী হবে

রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্প নিজের অবস্থান আগেই জানিয়েছেন। নির্বাচনি প্রচারকালেই তিনি বলেছেন, এই যুদ্ধ তিনি এক দিনেই শেষ করতে পারবেন। তবে তিনি কীভাবে সেটা করবেন, তা বিস্তারিত বলেননি। শুরু থেকেই মূলত ইউক্রেনকে শত শত কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা দেওয়ার সমালোচনা করেছেন তিনি। তার এসব আলোচনা, সমালোচনা, প্রতিশ্রুতি থেকে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে যে, তিনি ইউক্রেনকে আঞ্চলিক সমঝোতা করতে চাপ দিতে পারেন।

 

বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, ট্রাম্পের মনোনীত বিশেষ দূত কিথ কেলগ ১০০ দিনের মধ্যে এ-সংকট সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করছেন এবং ইউক্রেনকে শান্তি আলোচনায় অংশ নেওয়ার শর্তে সহায়তা দেওয়ার কথা বলেছেন। এটির ওপর নির্ভর করবে অনেক কিছুই। পুরো বিশ্বেই ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ন্যাটোর নিরাপত্তার শর্তে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে রাজি আছেন বলে জানিয়েছেন।

 

ন্যাটো দুর্বল হতে পারে

ট্রাম্প ন্যাটো নিয়ে সমালোচনা অব্যাহত রেখেছেন। তিনি গত মেয়াদেও এই সামরিক জোট নিয়ে নিজের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছিলেন। তার অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্র এ জোটের পেছনে বেশি ব্যয় করছে। ট্রাম্প চান, ন্যাটো জোটের ইউরোপীয় সদস্যরা প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির ৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করুক। তবে তিনি ন্যাটো জোট থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে আনবেন কি না, তা এখনো স্পষ্ট করেননি। বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, জোট থেকে বের হয়ে না এলেও ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের সংখ্যা কমিয়ে ন্যাটোকে দুর্বল করে দিতে পারেন ট্রাম্প। এর ফলে ন্যাটোর নিরাপত্তা নীতিতেও পরিবর্তন আসতে পারে।

 

মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরবে কি

ক্ষমতার দ্বিতীয় মেয়াদে মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্প ইসরায়েলপন্থি অবস্থান ধরে রাখবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে যাতে চুক্তি হয়, সে চেষ্টাও চালাতে পারেন তিনি। এ বিষয়ে আব্রাহাম অ্যাকর্ডসকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন তিনি। সেটির ভিত্তিতে সৌদি আরব এবং ইসরায়েলের মধ্যে চুক্তি করার চেষ্টা করতে পারেন। মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থান অব্যাহত থাকতে পারে। তিনি ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা এবং সামরিক প্রতিরোধ জারি করতে পারেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার পুনর্বাসনে কী ভূমিকা রাখেন সেটিও এখন দেখার বিষয়।

 

গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে গত বুধবার ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতিকেও সমর্থন করেছেন তিনি। যদিও সিরিয়ার সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র নাক গলাবে না বলেও জানান। দেশটিতে বিদ্রোহীদের হাতে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতন ঘটে। মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের পক্ষ থেকেও ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। দেশটির নতুন সংস্কারপন্থি প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানকে পশ্চিমাপন্থি হিসেবে দেখা হয়। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইরান আশা করছে ট্রাম্পের নতুন প্রশাসন বাস্তবভিত্তিক নীতি নিয়ে সামনে এগোবে।

 

ইউরোপে ডানপন্থিদের প্রভাব বাড়তে পারে

ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ইউরোপের ডানপন্থি নেতাদের দিকেও বন্ধুত্বের হাত বাড়ানোর উদ্যোগ দেখা গেছে। তার অভিষেক অনুষ্ঠানে অতিথি তালিকায় ছিলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ও আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জেভিয়ার মিলেই। এর বাইরে হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট ভিক্টর অরবান, যুক্তরাজ্যের ডানপন্থি রিফর্ম পার্টির নেতা নাইজেল ফারাজ, ফ্রান্সের রাজনীতিবিদ জেমোর, স্পেনের কট্টর জাতীয়তাবাদী ভক্স পার্টির নেতা সান্তিয়াগো আবাস্কাল, জার্মানির কট্টরপন্থি অ্যালিস ভাইদেলসহ অনেকেই।

 

রুশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক বদলে যাবে

আগামী চার বছরে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক খানিকটা স্বাভাবিক হতে পারে। ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের সমালোচনা করে আসছেন ট্রাম্প। গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে থেকে তিনি বলে আসছেন, প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে পারবেন। কিন্তু তার উপদেষ্টারা স্বীকার করেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ২৪ ঘণ্টায় বন্ধ হচ্ছে না। এ যুদ্ধ বন্ধ করতে সম্ভবত কয়েক মাস সময় লাগবে। ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, শান্তি চুক্তি করতে হলে ইউক্রেনকে তার কিছু ভূখণ্ড রাশিয়াকে ছেড়ে দিতে হতে পারে। রাশিয়ার পক্ষ থেকেও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহের কথা জানানো হয়েছে।

 

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য বিরোধ বাড়বে

চীনের প্রতি ট্রাম্পের মনোভাব আগে থেকেই কঠোর। সে মনোভাব আরও তীব্র হতে পারে। তিনি চীনা পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দিয়েছেন। ট্রাম্প প্রশাসন বরাবরই চীনকে একটি বড় হুমকি হিসেবে দেখে, বিশেষ করে তাইওয়ান ইস্যুতে। বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, ট্রাম্প সামরিক পদক্ষেপের বিরোধিতা করলেও চীনকে হুমকি দিয়ে রেখেছেন। তাইওয়ানের প্রতি চীন কোনো আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নিলে, তিনি দেশটির বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছেন। তবে চীন ঠেকাও ধুয়া তুলে ট্রাম্প আমদানি শুল্ক আরোপের যে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন, অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ বিষয়টিকে মস্ত ভুল বলে মনে করেন। যুক্তরাষ্ট্র যদি শুল্কের ঢিলটি ছোড়ে, তাহলে চীন যে পাল্টা পাটকেলটি ছুড়বে, তা নিশ্চিত। সে কথার ইঙ্গিত করে ওয়াশিংটনে চীনের মুখপাত্র লিউ পেনগুই বলেছেন, ‘শুল্কযুদ্ধ বা বাণিজ্যযুদ্ধে আমরা কেউই জিতব না।’ গতকাল রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, চীনের সঙ্গেও সম্পর্ক স্বাভাবিক করার অভিপ্রায় রয়েছে ট্রাম্পের।

 

জলবায়ু পরিবর্তন

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে ট্রাম্প উদাসীন। তিনি এটি মানতে নারাজ। দ্বিতীয় মেয়াদেও ট্রাম্প প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিতে পারেন এবং জীবাশ্ম জ্বালানির উৎপাদন বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিতে পারেন। তিনি নির্বাচনের সময়ই সবুজ শক্তির জন্য আর্থিক প্রণোদনা কমানো এবং তেল ও গ্যাস ড্রিলিং বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ট্রাম্পের এ উদ্যোগ বৈশ্বিক জলবায়ু প্রচেষ্টাকে ধীর করতে পারে।

 

গ্রিনল্যান্ড ও পানামা খাল

গ্রিনল্যান্ড ও পানামা খাল বিতর্ক সম্প্রতি ব্যাপকভাবে শুরু হয়েছে। আর একে উসকে দিয়েছেন ডোনাল্ট ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক স্বার্থের কথা উল্লেখ করে গ্রিনল্যান্ড কেনার এবং পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ব্যাপারে তার বিতর্কিত ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেন তিনি। বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, এই পদক্ষেপগুলো সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে এটি ট্রাম্পের মনোভাব প্রকাশ করছে। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে জোর সমালোচনা হয়েছে। ট্রাম্প অবশ্য শুধু গ্রিনল্যান্ড ও পানামা খাল নয়, একাধিকবার কানাডাকেও নিজেদের ৫১তম অঙ্গরাজ্য করে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। যদিও সেটি কৌতুক হিসেবে করা। তারপরও এটি কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ এবং এ নিয়েও ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে গোটা বিশ্বেই। এ ধরনের বিষয়গুলো সামনে আরও বাড়তে পারে বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

 

সীমান্ত নিরাপত্তায় জোর

সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রের খবর, দায়িত্ব গ্রহণের পরই আমেরিকার সীমান্তে নিরাপত্তার ওপর জোর দেবেন ট্রাম্প। মাদক পাচার চক্রগুলোকে ‘বিদেশি জঙ্গি গোষ্ঠী’ হিসাবে ঘোষণা করবেন। আমেরিকা এবং মেক্সিকোর সীমান্তে জরুরি পরিস্থিতিও ঘোষণা করা হতে পারে।

 

যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক

আমেরিকার সঙ্গে ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের আরও একটি নতুন অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘পুরনো বন্ধু’ ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নেওয়ার পরে ভারতের ব্যাপারে নতুন কী পদক্ষেপ নেবেন তা জানতে নয়াদিল্লি উদগ্রীব। ওই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাননি মোদি, যা কিছুটা হলেও ধাক্কা দিয়েছে সাউথ ব্লককে, এমনটা মনে করছে কূটনৈতিক শিবিরের একাংশ। তবে মোদি না থাকলেও আমন্ত্রণ পান বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। রিপাবলিকান নতুন কর্তাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করবেন তিনি আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক বিষয়গুলো নিয়ে। খবরে বলা হয়েছে, ভারত নিয়ে ট্রাম্পের নতুন নীতি কী হবে সেদিকে তাকিয়ে আছে সাউথ ব্লক।

 

মেক্সিকো, কানাডার সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ

মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আমদানি করা জিনিসের ওপরে বিপুল বাণিজ্য কর চাপানোর হুমকি দিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে তার বাণিজ্য নীতি কোন খাতে বইবে, নজর থাকবে তার ওপরও। আগামী দিনে দেশ দুটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে ফাটল ধরতে পারে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

দৈনিক ইনাতগঞ্জ বার্তা / ইকবাল

Previous Article

নবীগঞ্জে সেনাবাহিনীর অভিযানে ই য়া বা ব্যবসায়ী ...

Next Article

ফেসবুকে মাশরাফির মৃ ত্যু র গুজব

0
Shares
  • 0
  • +
  • 0
  • 0
  • 0
  • 0

Related articles More from author

  • আন্তর্জাতিক

    দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল পদচ্যুত

    April 4, 2025
    By Masud Sikdar
  • আন্তর্জাতিক

    পাকিস্তান-ভারতের আকাশপথ নিষেধাজ্ঞা : বিপদে উভয় দেশ

    May 3, 2025
    By Masud Sikdar
  • আইন আদালতআন্তর্জাতিক

    লিবিয়ার ‘যু দ্ধ বা জ’ নেতাকে মুক্তি, স মা লো চনা র মুখে ইতালি

    January 24, 2025
    By ইকবাল তালুকদার
  • আন্তর্জাতিক

    উত্তেজনা বাড়াচ্ছে ভারতের পুশইন, চিঠি পাঠানোর পরও থামছে না বিএসএফ

    May 17, 2025
    By Masud Sikdar
  • -লিড নিউজআন্তর্জাতিক

    থাইল্যান্ডে বাস দুর্ঘটনায় নিহত ১৮

    February 26, 2025
    By ইকবাল তালুকদার
  • আন্তর্জাতিক

    যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানানো সেনাদের বরখাস্তে নেতানিয়াহুর সমর্থন

    April 11, 2025
    By Masud Sikdar

Leave a reply Cancel reply

  • সুনামগঞ্জ জেলা

    সুনামগঞ্জে দুর্নীতিবিরোধী গণশুনানি ১৯ মে

  • রাজনীতি

    দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হলে দ্রুত সুষ্ঠু ভোটের বিকল্প নেই: শামা ওবায়েদ

  • -লিড নিউজবিনোদন

    নীরবে বাগদান, মুখ খুললেন ডুয়া লিপা