হবিগঞ্জে চলন্ত বাসে ধর্ষণ: চালকের পর হেলপারও গ্রেপ্তার

স্টাফ রিপোর্টারঃ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় চলন্ত বাসে এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় বাসের হেলপার লিটন মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৯)। গ্রেপ্তারকৃত লিটন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার নুরু মিয়ার ছেলে বাসিন্দা।সোমবার (১৬ জুন) রাত পৌনে ১২টার দিকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। র্যাব-৯ এর মিডিয়া কর্মকর্তা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৯, সিলেট এর সদর কোম্পানী এবং সিপিসি-৩ শায়েস্তাগঞ্জ ক্যাম্প এর যৌথ আভিযানিক দল ১৬ জুন দিবাগত রাত আনুমানিক ১২টার দিকে সিলেট জেলার দক্ষিন সুরমা থানাধীন জালালপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জে চলন্ত বাসে কলেজ ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত বাস হেলপার কে গ্রেফতার করা হয়। বিজ্ঞপ্ততিতে আরও জানোনো হয়, পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে গ্রেফতারকৃত আসামীকে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হবে। এর আগে ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাসচালক সাব্বির মিয়াকে রোববার রাতেই স্থানীয়দের সহায়তায় আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
ঘটনাটি ঘটে রোববার (১৫ জুন) রাত ১০টার দিকে নবীগঞ্জ-শেরপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের আউশকান্দি এলাকায়। ভুক্তভোগী ছাত্রী বর্তমানে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পুলিশ জানায়, ধর্ষণের শিকার কিশোরী বানিয়াচং উপজেলার বড় বাজার এলাকার বাসিন্দা এবং ঢাকার ফার্মগেটের একটি গার্মেন্টসে কাজ করেন। ওই দিন ঢাকার ফার্মগেট থেকে ‘বিলাশ পরিবহন’ নামের একটি বাসে করে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। তার শায়েস্তাগঞ্জে নামার কথা থাকলেও তিনি গাড়িতে ঘুমিয়ে পড়ায় বাসটি সিলেট পর্যন্ত চলে যায়। সিলেটে পৌঁছার পর ঘুম ভাঙলে ওই কিশোরী নবীগঞ্জ হয়ে বানিয়াচং যাওয়ার উদ্দেশ্যে সিলেট-নবীগঞ্জ রুটে চলাচলকারী ‘মা এন্টারপ্রাইজ’ নামের একটি বাসে ওঠেন। বাসটি বিভিন্ন স্থান থেকে যাত্রী উঠানো-নামানোর সময় ধীরে ধীরে ফাঁকা হয়ে পড়ে। শেরপুর এলাকায় পৌঁছার পর অন্যান্য যাত্রীরা নেমে গেলে বাসে ওই কিশোরী একা হয়ে পড়েন। এরপর চলন্ত অবস্থায় বাসের হেলপার লিটন মিয়া এবং পরে চালক শাহ সাব্বির মিয়া তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। বাসটি নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি এলাকায় পৌঁছলে কিশোরী জোরে চিৎকার শুরু করেন। তার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন দ্রুত সেনাবাহিনী ও পুলিশকে খবর দেন। এসময় খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল ছালামতপুর এলাকায় অবস্থান নেয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় বাসের গতিরোধ করে বাসচালক শাহ্ সাব্বির মিয়াকে আটক এবং ভুক্তভোগী কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়।
তবে ঘটনার পরপরই হেলপার লিটন পালিয়ে যায়। অবশেষে র্যাব-৯ তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।