সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের শিবগঞ্জ-বেগমপুর সড়কে ৬ মাস ধসে সরাসরি যানচলাচল বন্ধ থাকায় উপজেলার দুই ইউনিয়নের কমপক্ষে ৩০ গ্রামের লাখো মানুষ চরম দুর্ভোগে আছেন। গত বছরের আগস্টে অব্যাহত বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে এবং কুশিয়ারা নদীর ভাঙনে সড়কের অধিকাংশ জায়গা বিলীন হয়ে যাওয়ায় সব ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।সরজমিনে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঘুরে দেখা যায়, শিবগঞ্জ-বেগমপুর সড়কের জগন্নাথপুরের অলৈতলী ভাঙাবাড়ি নামক স্থানে স্থানীয় কুশিয়ারা নদীর পাড় ঘেঁষে যাওয়া সড়কের একাংশ প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। সড়কের জায়গার দুই প্রান্তে পায়ে হেঁটে চলাচল করে গাড়িতে ওঠতে হয়। ফলে, চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রী সাধারণকে।
এলাকাবাসী জানান, গত বছরের আগস্ট মাসে টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে জগন্নাথপুর-বেগমপুর সড়ক ডুবে যায়। তবে, বন্যার পানি নেমে গেলেও কুশিয়ারা নদীর অব্যাহত ভাঙনে ভাঙাবাড়ি নামক স্থানে সড়কের বেশকিছু অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়।
এতে করে ওই সড়কের সরাসারি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ফলে উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের জালালপুর, খানপুর, আলীপুর, নতুন কসবা, গোতগাঁও, সোনাতলা, কদমতলা, মশাজান, কাতিয়া, অলৈতলী আলাগদি, আশারকান্দি ইউনিয়নের কালনিচর, আটঘর, খালাইনজুড়া, মিলিক, বড়ফেছি, ছোট ফেচিসহ। প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। কারণ
উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে এই সকড়টি। এছাড়াও এসড়ক দিয়ে বেগমপুর হয়ে সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলসহ ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ করে আসছেন উপজেলাবাসী।
কাতিয়া গ্রামের সেলিম খান বলেন, বন্যা ও নদী ভাঙনের কবলে পড়ে গত ৬ মাস ধরে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ। যেকারণে আমরা দুই ইউনিয়নের বাসিন্দাসহ লাখো মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগে আছি। কসবা গ্রামের সাবলু মিয়া জানান, এই সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত আমাদেরকে উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। এছাড়া, এই সড়ক দিয়ে বেগমপুর হয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে আসছি আমরা। কিন্তু, গত ৬ মাস ধরে সড়কে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ থাকায় চলাফেরা কষ্টে আছেন এখানকার মানুষজন।
পাইলগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) নজমুদ্দিন বলেন, বন্যা আর কুশিয়ারা নদীর করাল গ্রাসে গ্রামীণ সড়কটি ভেঙে নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় প্রায় ৫ থেকে ৬ শ’ ফুট জায়গা মানুষকে হেঁটে চলাচল করতে হচ্ছে। তবে দুই, তিন দিন আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে বিকল্প একটি রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কাজ শেষ হলে দুর্ভোগ কমে যাবে লোকজনের।
জগন্নাথপুর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী সোরবাব হোসেন জানান, সড়কটি এলজিইডির অধীনে হলেও নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধানে পাউবোরে উদ্যোগে একটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে। এটির কাজ শেষ হলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ কমে যাবে।
জগন্নাথপুর উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান সহকারী প্রকৌশলী সবুজ কুমার শীল বলেন, ওই ভাঙা এলাকায় হাওরের ফসলরক্ষা বেড়িবাঁধের কাজ চলছে। এটি শেষ হলে চলাচলে সুবিধা পাবে এলাকাবাসী।
সুত্রঃ দৈনিক জৈন্তা বার্তা
Leave a Reply