শিবগঞ্জ-পাইলগাঁও সড়কের বেহাল দশা,চরম ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের শিবগঞ্জ-পাইলগাঁও কাঁচা সড়কটির বেহাল দশা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয় হাজারো মানুষ। সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। কাদা আর পানি মিশে রাস্তাটি রীতিমতো জলাভূমিতে পরিণত হয়েছে। জরুরি সেবার যানবাহন তো দূরের কথা, হেঁটেও চলা দায়।
প্রায় ২ দশমিক ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই কাঁচা রাস্তাটি ১৯৯৬ সালে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদের উদ্যোগে নির্মিত হয়। স্বাধীনতার এত বছর পরেও রাস্তাটি পাকাকরণ হয়নি। জনপ্রতিনিধিরা ভোটের সময় প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবায়ন নেই। বরং দীর্ঘদিন ধরে এই রাস্তায় চলাচল করে আসছেন অন্তত ৫০-৬০টি গ্রামের বাসিন্দারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাটি ও বৃষ্টির পানির সংমিশ্রণে রাস্তাটি কাদার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। বৃষ্টির পানি জমে গিয়ে রাস্তাটি চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানিয়দের।
এ অবস্থায় একাধিকবার এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বার, প্রশাসন, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। কিন্তু কেউ কোনো কাজ করেননি। তাই ভোগান্তি নিয়েই এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাঁদের।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ‘গ্রামীণ সড়ক সেতু ও কালভার্ট মেরামত ও সংরক্ষণ’ প্রকল্পের আওতায় শিবগঞ্জ-পাইলগাঁও-বেগমপাড়া-ঢাকা-সিলেট সংযোগ সড়কে ২ কোটি ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ হলেও, বাস্তবে কাজ হয়নি। রাস্তার ৭০০ থেকে ৩০০০ মিটার পর্যন্ত দুই পাশে গার্ড ওয়াল নির্মাণ করে কাজ বন্ধ করে দেয় ঠিকাদার। চুক্তি অনুযায়ী, কাজ শুরুর কথা ছিল ১ জানুয়ারি ২০২৫ এবং শেষ হওয়ার কথা ১৭ মার্চ ২০২৫। কিন্তু এখনও কোনো কাজ শুরু হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের এক শিক্ষার্থী জানান, প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে শত-শত শিক্ষার্থীরা তাঁদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করেন। কিন্তু রাস্তাটির বেহাল দশা হওয়ায় চলাচলে তাঁদের খুব সমস্যা হয়। এমনকি জরুরি কাজেও কোনো গাড়ি গ্রামে প্রবেশ করতে পারে না।
তিনি জানান, এলাকার মুসলিম বা হিন্দু কেউ মারা গেলে কাঁদার কারণে সৎকার, দাফন-কাফনে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় এলাকাবাসীকে। তাছাড়া অসুস্থ ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতাল নিয়ে যেতেও দুর্ভোগে পোহাতে হয় স্থানীয়দের। রাস্তাটি পাকাকরণ এখন সময়ের দাবি।
এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা জালাল মিয়া বলেন, ‘জগন্নাথপুর-শিবগঞ্জ এই কাঁচা সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবছর বর্ষাকালে এই রাস্তাটি ব্যবহারের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী সোহরাব হোসেন বলেন, শিবগঞ্জ-পাইলগাওয়ের ২ দশমিক ৩ কিলোমিটার কাচা রাস্তাটির জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান রেনু মিয়া বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে রাস্তায় পানি জমে থাকায় আমি কাজ করতে পারিনি। কিছুদিনের মধ্যেই কাজ শুরু করব।
এ বিষয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরকত উল্লাহ বলেন, ‘দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হবে।
দৈনিক ইনাতগঞ্জ বার্তা