1. anjhonroy1@gmail.com : Anjhon Roy : Anjhon Roy
  2. admin@inathganjbarta.com : inathganjbarta :
  3. iqbalpress02@gmail.com : ইকবাল তালুকদার : ইকবাল তালুকদার তালুকদার
  4. manna820@gmail.com : আলী জাবেদ মান্না। : আলী জাবেদ মান্না।
  5. masudsikdar26@gmail.com : Masud Sikdar : Masud Sikdar
শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ০৮:৩৯ অপরাহ্ন

কাঁকড়া চাষে বদলে যাচ্ছে উপকূল, রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে

  • আপডেটের সময়: শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫
  • ১১ ভিউ

সুন্দরবনের গা ঘেঁষা সাতক্ষীরার শ্যামনগরে কাঁকড়া চাষ এখন আর কেবল বিকল্প আয়ের উৎস নয়। এটি এখন লাভজনক ও টেকসই শিল্প। ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিচালিত এ চাষাবাদে স্বাবলম্বী হচ্ছে শত শত পরিবার। কর্মসংস্থান হয়েছে নারীদেরও।এখন সাতক্ষীরার প্রত্যন্ত গ্রামে গেলে দেয়া যায়, কাটা হচ্ছে হাজার হাজার তেলাপিয়া মাছ। যা খাঁচাবন্দি কাঁকড়াগুলোর খাবার। আর নিয়ম করে তিনবেলা লক্ষ্য রাখা কাঁকড়াগুলো খোলস পাল্টেছে কিনা। ২০ থেকে ২২ দিনের মধ্যেই কাঁকড়ার ওজন বাড়লে কাঁকড়াগুলো রপ্তানি হয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।

 

কাঁকড়ার এমন সম্ভাবনা দেখে সরকারি-বেসরকারি নানা সংস্থা যেমন আগ্রহী, তেমনি বর্তমানে চাষিরাও হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন এ খাতে।শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের ৯নং সোরা গ্রামের বাসিন্দা মতিউর রহমান। ৬ বিঘা জমিতে কাঁকড়া চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তিনি বলেন, প্রায় পাঁচ-ছয় বছর ধরে খাঁচায় কাঁকড়া পালন করছি। ভালো লাভ হয়। তবে সমস্যা একটাই-পানির সংকট। আর যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না। গাবুরা ইউনিয়নে একটি কোম্পানি কাজ করে। তারা নদীপথে বোট নিয়ে এসে নির্ধারিত স্থানে কাঁকড়া সংগ্রহ করে নিয়ে যায়।সরকারি বা বেসরকারি সহায়তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা এখনো কোনো সরকারি সহযোগিতা পাইনি। যদি প্রশিক্ষণ ও পানির সমস্যা সমাধানে কেউ এগিয়ে আসে, তাহলে এই পদ্ধতিতে আরও বেশি মানুষ যুক্ত হবে।সাতক্ষীরার এই প্রকল্পে শুধু চাষিরাই নন, কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে বহু শ্রমজীবী মানুষের জন্যও। তাদের একজন মো. রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, সকাল ৭টা থেকে রাত ৭টা পর্যন্ত ডিউটি। এর মধ্যে কাঁকড়ার খাঁচা চেক করতে হয় দিনে চারবার- সকাল, দুপুর, বিকেল, সন্ধ্যায়। এরপর রাত ১১টা ও রাত ৩টায় দেখতে হয় খোলস বদলেছে কি না।

 

তিনি জানান, সফটশেল কাঁকড়া আলাদা করে তোলা হয়। পরে কোম্পানি সেই কাঁকড়া বিভিন্ন গ্রেডে কিনে নেয়। খাদ্য হিসেবে তেলাপিয়া মাছ দেওয়া হয় প্রতি তিন দিন পরপর।

 

জানা যায়, এই প্রকল্পে নারীরাও সরাসরি যুক্ত। কেউ কাঁকড়ার খাবার হিসেবে তেলাপিয়া মাছ কেটে দেন, কেউ খাঁচা পরিষ্কারের কাজ করেন।

 

স্থানীয় যুবক জাফর সাদিক সোহাগ বলেন, এই চাষের কারণে গ্রামের মানুষের কর্মসংস্থান বেড়েছে। নারীরাও আয় করছেন। এটা অনেক লাভজনক পদ্ধতি।মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সাতক্ষীরা জেলা থেকে ৬৪৪ মেট্রিক টন সফটশেল কাঁকড়া রপ্তানি হয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা। বর্তমানে ৩৬৪ জন চাষি, জেলার ৩২১টি স্থানে এই চাষ করছেন। বছরে উৎপাদন হচ্ছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মেট্রিক টন কাঁকড়া।

 

সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জি এম সেলিম বলেন, সাতক্ষীরায় চিংড়ির পাশাপাশি কাঁকড়া চাষ দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। এটি খুব সম্ভাবনাময় একটি খাত। আমরা প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালাচ্ছি, কিছু বেসরকারি সংস্থাও কাজ করছে।

 

তবে সমস্যার কথাও জানালেন তিনি। প্রতি বছর পাঁচ মাস সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণ বন্ধ থাকে এবং এখানে কাঁকড়ার হ্যাচারি নেই। হ্যাচারি হলে সারা বছর উৎপাদন সম্ভব হতো এবং কর্মসংস্থান অব্যাহত থাকত বলে মনে করেন তিনি।

 

তিনি আরও বলেন, আমরা চেষ্টা করছি সরকারিভাবে কীভাবে এই বন্ধ সময়েও চাষিদের সহায়তা দেওয়া যায়। বনবিভাগের সঙ্গে আলোচনাও চলছে। বাগদা বা গলদার পাশাপাশি কাঁকড়া চাষ আত্মকর্মসংস্থানের বড় মাধ্যম হতে পারে।

 

এক সময়ের উপেক্ষিত সুন্দরবনঘেঁষা জনপদ আজ স্বপ্ন দেখছে কাঁকড়াকে ঘিরে। সরকারি সহায়তা, হ্যাচারি ও রপ্তানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা হলে সাতক্ষীরা হতে পারে দেশের কাঁকড়া রপ্তানির কেন্দ্রস্থল- এমনই বিশ্বাস স্থানীয়দের।

এই পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা অথবা ভিডিও কপি করা সম্পূর্ণ বেআইনি @2025
Desing & Developed BY ThemeNeed.com