সিলেটের এমসি কলেজে মিজানুর রহমান রিয়াদ নামে এক শিক্ষার্থীর উপর হামলার সাথে ছাত্র শিবিরের কিছু কর্মী জড়িত বলে জানিয়েছে জামায়াত ইসলাম।
রোববার সন্ধ্যায় সিলেটকেন্দ্রিক দল আঞ্জুমানে আল ইসলাহ’র সাথে বৈঠক শেষে এমনটি জানিয়েছেন জামায়াত ইসলাম সিলেট মহানগরের আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত মধ্যরাতে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষার্থী রিয়াদ এক তালামিযে ইসলামিয়ার নেতা। তালামিযে ইসলামিয়া ধর্মভিত্তিক সংগঠন আঞ্জুমানে আল ইসলাহ’র ছাত্রসংগঠন।
এমসি কলেজ হামলার ঘটনা নিয়ে কয়েকদিন ধরে সিলেটে শিবির ও তালামিয মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছিলো। এটি সমাধানে রোববার বৈঠকে বসে দুটি সংগঠন। বৈঠক শেষে গণমাধ্যমের সাথে আলাকালে হামলায় শিবিরের দায় স্বীকার করে জামায়াত আমির বলেন, ফেসবুকে একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে সেখানে (এমসি কলেজে) যে বাড়াবাড়িটুকু হয়েছে, আমাদের দৃষ্টিতে সেখানে ছাত্রশিবিরের কিছুসংখ্যক কর্মী এটার সাথে জড়িত। এবং যেটা করেছে সেটা অন্যায়ভাবে করেছে এবং সেটা দুঃখজনক। আমরা এই ঘটনার নিন্দা জানাই। দুঃখপ্রকাশ করছি।
মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেন, শিবির ও তালামিয দুটিই আমাদের ভালোবাসার সংগঠন। এই দুটি সংগঠনের মধ্যে এমসি কলেজে একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে আজকে আমরা বসেছিলাম। আমরা পরষ্পরই ইসলামী সংগঠন আমরা দেশ ও জাতির ভালো চাই। নিজেদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি হলে বিরোধীপক্ষ উপকৃত হবে। ভবিষ্যতে আর কোন এ ধরণের ভুলবুঝাবুঝি তৈরি হয় আমরা পরষ্পর বসে এ ব্যাপারে মীমাংসার দিকে যাবো। কোন কর্মীও যেনো বাড়াবাড়ি না করে।
জামায়াতের আমির এমসি কলেজে শিক্ষার্থীর উপর হামলা শিবির কর্মী জড়িত বলে জানালেও ঘটনার পর শিবিরের কেন্দ্রিয় কমিটিেথেকে প্রেরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘটনার সাথে শিবিরের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করা হয়।
এদিকে, রোববার রাতে সেলেট মহানগর জামায়াতের পক্ষ থেকে প্রেরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীদের মাঝে সৃষ্ট অনাকাঙ্খিত ঘটনার আপোষ নিষ্পত্তি হয়েছে। কয়েকজন ছাত্রের মধ্যে সংঘটিত অনাকাঙ্খিত ঘটনাটি নিয়ে ৩য় পক্ষের অবৈধ ফায়দা হাসিল ও ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে এক মতবিনিময় সভা করেন সিলেট জামায়াত ও আঞ্জুমানে আল ইসলাহ নেতৃবৃন্দ।
রোববার সন্ধ্যায় নগরীর একটি প্রতিষ্ঠানে উক্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংঘটিত অনাকাঙ্খিত ঘটনার ব্যাপারে নিন্দা জানানো হয় ও দুঃখ প্রকাশ করা হয়। ভবিষ্যতে এই ধরণের কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন।
সভায় সেদিনের ঘটনায় আহত তালামীয কর্মী মিজানুর রহমান রিয়াদের প্রতি সহমর্মিতা জানানো হয় এবং তার সুস্থতা কামনায় মোনাজাত করা হয়। ইসলামী সংগঠনগুলোর মধ্যে ঐক্য সুদৃঢ় করা, পরস্পর উস্কানী ও উত্তেজনামূলক বক্তব্য পরিহারের আহ্বান জানানো হয়। দুই পক্ষের মধ্যে সৃষ্ট ঘটনায় ৩য় পক্ষ যাতে অবৈধ ফায়দা হাসিল করতে না পারে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে বলা হয়। সভায় জুলাই বিপ্লবে শাহাদাতবরণকারী শহীদদের রুহের মাগফেরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনা করে মোনাজাত করা হয়। জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে ধারণ করে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানানো হয়।
মতবিনিময় সভায় জামায়াত নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান এবং জেলা জামায়াত নেতা ও সাবেক দক্ষিণ সুরমা উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা লোকমান আহমদ।
আঞ্জুমানে আল ইসলাহ নেতৃবৃন্দের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন- মাওলানা রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী ফুলতলী, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, এডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকীব, হাফিজ নাজমুল হুদা, মাওলানা জৈন উদ্দিন ও কাজী বুরহান উদ্দিন প্রমূখ।
https://websites.co.in/refer/168184
দৈনিক ইনাতগঞ্জ বার্তা/ ইকবাল
Leave a Reply