সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় শেষের পথে বোরো ধান কাটার উৎসব। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী হাওরে এখন পর্যন্ত প্রায় ৯৫ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। হাওরের মাঠজুড়ে রোদ, আর তাই কৃষকের মুখে প্রশান্তির ছায়া। এ যেন প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের জয়ের গল্প।
বোরো মৌসুমের শুরুটা যতটা মসৃণ ছিল, মাঝপথে ততটাই অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন কৃষকরা। আবহাওয়া ছিল কিছুটা অস্থির। একদিন রোদ, তো পরদিন হঠাৎ বৃষ্টি। হাওরের মাঠে ধান যখন পাকতে শুরু করেছে, তখন এ ধরনের বৃষ্টিপাত কৃষকদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি করেছিল। তবে রোদের দেখা মেলায় সেই শঙ্কা কাটিতে সোনার ফসল ঘরে তুলতে পেরে স্বস্তি ফিরেছে কৃষকদের মনে। এখন কাটা ধান মাড়াই আর শুকানোতেই ব্যস্ততা হাওরজুড়ে।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, এ বছর শান্তিগঞ্জের বিভিন্ন হাওরে ২২ হাজার ৬১২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে হাওরে ১৮ হাজার ৩৯৭ হেক্টর ও হাওর নয় এমন অঞ্চলে ৪ হাজার ২১৫ হেক্টর জমি আবাদ হয়েছে। এ বছর ধান উৎপন্ন হবে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫৮৩ মেট্রিক টন এবং চাল ৯৪ হাজার ৭৬৫ মেট্রিক টন। যার বাজারমূল্য ৪৩০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে!
দেখার হাওরের কৃষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, বৃষ্টি বেশি হয়নি, কিন্তু সময়-অসময়ে হচ্ছিল। তাই ভয় লাগছিল ধান ঘরে তুলতে পারবো কি না ভেবে। সবকিছুর পড়ে এখন ধান ঘরে তুলতে পেরে ভালো লাগছে।
আরেক কৃষক রফিক মিয়া বলেন, আমরা গরিব মানুষ, ধানটাই আমাদের আসল সম্বল। আল্লাহর রহমতে এবার ফলন ভালো, আর রোদও ঠিকঠাক আছে। ধান শুকিয়ে ঘরে তুলছি। শান্তি লাগছে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আহসান হাবিব বলেন, শঙ্কা কাটিয়ে কৃষকরা তাদের সোনার ফসল ঘরে তুলতে পেরে খুশি। ইতোমধ্যেই হাওরের ৯৫ ভাগ ধান কাটা শেষ। আর অল্পদিনের মধ্যেই শতভাগ ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে। ধানের দাম ভালো থাকায় কৃষকরা লাভবান হবেন।
Leave a Reply