রাজশাহীতে গুটি জাতের আম পাড়ার মধ্য দিয়ে আম পাড়া শুরু হয়েছে। শেষ হবে গৌড়মতি দিয়ে। আমের মৌসুম চলবে আগস্ট পর্যন্ত। রাজশাহী মহানগর ও আশপাশের উপজেলার বাগানগুলো থেকে সংগ্রহ করা কাঁচা-পাকা আম বিক্রি হচ্ছে স্থানীয় বাজারে। এবার জেলায় ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকার আম বাণিজ্যের সম্ভাবনা রয়েছে।সংশ্লিষ্টরা বলছেন- রাজশাহী অঞ্চলের মানুষের মধ্যে আমকে ঘিরে এক ধরনের উৎসবের সৃষ্টি হয়। আম পাড়া, বিকিকিনি, আত্মীয়-স্বজনের জন্য পাঠানো, দাওয়াত করে আম চিড়া খাওয়ানোকে ঘিরে এক ধরনের উৎসব হয়ে থাকে বাড়িতে বাড়িতে। এছাড়াও পাড়া-মহল্লার সড়কের পাশে ও হাটবাজারে ফলের দোকান ছাড়াও শুধু আম বিক্রির দোকান বসে অস্থায়ীভাবে। এসব দোকান ও আড়ৎ থেকে অনেকেই আম কিনে নিয়ে যান।
তবে আমচাষিদের কাছ থেকে ৪০ কেজিতে মণের জায়গায় ৪৫ থেকে ৪৮ কেজি পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন ৪০ কেজিতে মণ। আমচাষিরা বলছেন- ওজনে বেশি আম নেওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা।অপরদিকে এ বছর রাজশাহী থেকে প্রতি কেজি আম পাঠানোর খরচ পড়ছে ১২ থেকে ২০ টাকা। ঢাকায় ১২ টাকা, ঢাকার বাইরে দূরত্ব অনুযায়ী ২০ টাকা পর্যন্ত।
আমচাষিদের দাবি- এবার আমের ফলন ভালো হয়েছে। এখনো বাজার ব্যবস্থা বোঝা যাচ্ছে না। বেশি আম বাজারে উঠতে থাকলে তখন দামের বিষয়টি বোঝা যাবে। তবে সময়মতো আম পাড়ার সুযোগ পাওয়ায় সন্তুষ্ট তারা। গুটি আমের পরে বাজারে পাওয়া যাবে গোপালভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়া, আম্রপালি, ফজলি, আশ্বিনা আম।শুক্রবার (১৬ মে) দুপুরে রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলা থেকে আম বিক্রি করতে এসেছেন বানেশ্বর বাজারে ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন- বানেশ্বরে সপ্তাহে শনি ও মঙ্গলবার হাট বসে। এটি রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের হাট।
নগরীর ক্যান্টনমেন্ট এলাকার আনোয়ার হোসেন বলেন, বাগান থেকে সাগরিকা আম নামানো শুরু হয়েছে। এ আমকে অনেকেই আঁটির আমও বলে। এই গুটি জাতের প্রায় ৩০০ রকমের আম আছে, যেগুলো অন্য জাতের চেয়ে আগেভাগেই পাকতে শুরু করে। চোষা বা চোরষা, বৈশাখী ও চাপড়া নামের গুটি আমও নামানো শুরু হয়েছে।
বাঘা উপজেলার আমচাষি আনোয়ার হোসেন পলাশ জানান, প্রথমদিন বাগান থেকে বড় আকারের গুটি আম মণপ্রতি বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৪০০ টাকায়। আর ছোট আমের দাম ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যে। গত বছরের তুলনায় এবার শুরুতেই দাম কিছুটা কম।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক উম্মে ছালমা জানান, গাছ থেকে গুটি জাতের আম পাড়া শুরু হয়েছে। এই আম নামানো চলবে আগামি জুলাই মাস পর্যন্ত। এবার আশা করা যাচ্ছে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর রাজশাহীতে ১৯ হাজার ৬০৩ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজার ৬ মেট্রিক টন। গত মৌসুমে আমের চাষ হয়েছিল ১৯ হাজার ৬০২ হেক্টর জমিতে।
Leave a Reply