নবীগঞ্জ প্রতিনিধি।। হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে ভূমি দখল করে দেয়াল নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে মান্দারকান্দি সরকারি প্রাইমারী স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ও অবিভাবক কমিটি এবং প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। আদালত ওই ভূমির ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছে। অথচ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইটের পাকা দেয়াল নির্মাণ করছে স্কুল কতৃপক্ষ ও ম্যানেজিং কমিটি,অবিভাবক কমিটির লোকজন।
এছাড়াও বিভিন্ন হুমকিধামকি দিয়ে আসছে তারা। যেকোনো সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আশংকা রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভূমির মালিক ভুক্তভোগী শাহ অলিউর রহমান। ভুক্তভোগী শাহ অলিউর রহমান নবীগঞ্জ উপজেলার কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের মান্দারকান্দি গ্রামের শাহ আব্দুল ওয়াহেদ এর পুত্র।
লিটন চন্দ্র রায় প্রধান শিক্ষক মান্দারকান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, আরজু মিয়া সভাপতি অবিভাবক কমিটি, উপজেলার কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা আসকির উল্লা, বিজন বিহারী ঘোষ, পদ্মব ঘোষ, সুলতান আহমেদ -সাফ কন্ট্রকটার,আব্দুল মন্নান, আরজু মিয়া, শাহদাত হোসেন, কামরুজ্জামান বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিলে ভূমির মালিক শাহ আব্দুল ওয়াহেদ বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে সহকারী জজ আদালত নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ একটি মামলা দায়ের করেন। ওই ভূমির ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছে আদালত। আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভূমিটিতে ইটের পাকা দেয়াল নির্মাণ করার জন্য গর্ত করেছে।
জানা গেছে, নবীগঞ্জ উপজেলার কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের মান্দারকান্দি মৌজার আরএস ৭৩৫ খতিয়ান ৫৫১ নম্বর দাগের ২১ শতক ভূমির মালিক ভুক্তভোগী শাহ আব্দুল ওয়াহেদ। ক্রয় সূত্রে ওই ভূমির মালিক তিনি।
আরও জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটি এবং অবিভাবক কমিটির লোকজন গায়ের জোরে ভূমি দখলের চেষ্টা করলে শাহ আব্দুল ওয়াহেদ আদালতের দারস্থ হন। এক আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনা করে মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই ভূমির ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন। দেয়াল নির্মাণ করায় নবীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে নবীগঞ্জ থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ করতে বন্ধ করতে নিষেধ দিয়েছেন।
তবে আদালতের আদেশ অমান্য করে ওই জায়গায় ইটের পাকা দেয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে। যা আদালত অবমাননাকর অপরাধ।
স্কুলের দাতা সদস্যের ওয়ারিশ শাহিন সরকার দুলাল বলেন, স্কুলের সংলগ্ন জায়গা ক্রয় সূত্রে এই জমির মালিক শাহ আব্দুল ওয়াহেদ । অনেক বছর আগে জমিটি ওয়াহেদ কিনেছেন। স্কুল কতৃপক্ষ ও তাদের মধ্যে মামলা চলমান রয়েছে। এনিয়ে যেকোনো সময় বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে।
ভুক্তভোগী জমির মালিক শাহ আব্দুল ওয়াহেদ এর পুত্র শাহ অলিউর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ভূমিটি আমরা ভোগদখল করে আসছি। কিন্তু গায়ের জোরে আমাদের এই ভূমি দখল করেছে স্কুল কতৃপক্ষ। এ ঘটনায় আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। ভূমিটিতে বর্তমানে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সেখানে পাকা ইটের দেয়াল নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। আদালত স্থিতাবস্থা জারি করেছে। সেই জায়গায় দেয়াল নির্মাণ করা বেআইনী। আমি এর সঠিক বিচার চাই। আমি হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার স্যারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
শাহ আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, এই জায়গায় আমার গোয়াল ঘর ছিল। স্কুলের ছাত্র/ছাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাইতে থাকিলে ছাত্রছাত্রীদের খেলাধূলার সুবিধার্থে ৬৮২ দাগের ভূমি হইতে গোয়ালঘর স্থানান্তর করিয়া বাচ্চাদের খেলাধুলার জায়গা করে দেই। শিক্ষকের সঙ্গে এক হয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতেছে এলাকার কিছু মানুষ। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে মান্দারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লিটন চন্দ্র রায় বলেন, দেয়াল নির্মাণের কাজ বন্ধ রয়েছে। আগামী তারিখে আমরা আদালতে হাজির হয়ে দেয়াল নির্মাণের কাজ করার জন্য আবেদন করব আদালতের অনুমোদন পেলে আমরা কাজ শুরু করব।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কেউ যদি তাদের কে হুমকি দিয়ে থাকেন তাহলে থানায় এসে জিডি করলে তদন্ত করে অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply