সেলিম মাহবুব,ছাতকঃ সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা গ্রামের যুবক আরিফ বাদশা (২৭) হাওরের কৃষিকে কেন্দ্র করে গড়ে তুলেছেন এক উজ্জ্বল স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন। গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে কৃষিকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে তিনি এখন একজন সফল উদ্যোক্তা ও প্রশিক্ষক। জানা গেছে, অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়াকালীন করোনাকালীন অবসর সময়ে যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, সুনামগঞ্জ থেকে তিন মাস মেয়াদি কৃষি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন তিনি। সেখান থেকেই তার উদ্যোক্তা হওয়ার যাত্রা শুরু। প্রশিক্ষণ শেষে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘গোয়াল ডেইরি ফার্ম’। ২০২২ সালে মাত্র দুটি গরু দিয়ে যাত্রা শুরু করা খামারে এখন রয়েছে ১৬টি গরু। প্রতিবছর কোরবানির ঈদকে ঘিরে তিনি ৫ থেকে ১০টি ষাঁড় মোটাতাজা করে বিক্রি করেন। গরু পালনের পাশাপাশি তার রয়েছে বিস্তীর্ণ কৃষি জমি। এসব জমিতে ধানের পাশাপাশি চাষ করেন ভুট্টা, সরিষা, সূর্যমুখী, বাদাম ও নানান শাকসবজি। স্থানীয় বাজারে এসব পণ্যের ভালো চাহিদা রয়েছে। পাশাপাশি তিনি হাওরের উন্মুক্ত চর ভূমিতে প্রাকৃতিক পরিবেশে হাঁস ও গরু পালন করছেন, যা থেকে প্রতি বছর আসে উল্লেখযোগ্য মুনাফা। বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠিত এগ্রো প্রজেক্টে ৩-৪ জন স্থানীয় শ্রমিক দৈনিক ও মাসিক মজুরিতে কাজ করছেন। তিনি শুধু নিজেই আত্মকর্মসংস্থানে থেমে থাকেননি, বরং অন্যদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতেও কাজ করছেন নিরলসভাবে। গত এক বছরে তিনি প্রায় ৪০০ জন যুবক-যুবতীকে কৃষিভিত্তিক প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। দিচ্ছেন খামার পরিচালনা, চাষাবাদ ও বাজার ব্যবস্থাপনা বিষয়ে দিকনির্দেশনা। পরিবেশ বান্ধব কৃষিকে গুরুত্ব দিয়ে বাড়িতে স্থাপন করেছেন বায়োগ্যাস প্লান্ট, যা থেকে মিলছে জ্বালানি ও জৈব সার—জায়গা পেয়েছে টেকসই কৃষি ব্যবস্থাপনায়। আরিফ বাদশা বলেন, “আমরা পারিবারিকভাবে কৃষির সঙ্গে যুক্ত। আমার বিশ্বাস, দেশের শিক্ষিত তরুণদের চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়া উচিত। এতে নিজে যেমন স্বাবলম্বী হবে, তেমনি দেশের অর্থনীতিও শক্তিশালী হবে।
যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা রণধীর দেবনাথ বলেন,“আরিফ বাদশা একজন সফল আত্মকর্মী। তিনি নিজের পাশাপাশি অন্যদের জন্যও নতুন দিগন্তের দুয়ার খুলে দিচ্ছেন। তার এই সাহসী ও সচেতন প্রয়াস আরও অনেককে অনুপ্রাণিত করবে—এই প্রত্যাশা করি।
দৈনিক ইনাতগঞ্জ বার্তা/ ইকবাল
Leave a Reply