হবিগঞ্জ প্রতিনিধি।। চলতি মৌসুমে হবিগঞ্জের বিভিন্ন হাওরে বোরোর বাম্পার ফলন হলেও ঘরে ধান তোলা নিয়ে চরম শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। জেলার ৯টি উপজেলার সবকটি হাওরে ধান কাটার শ্রমিকের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে করে কালবৈশাখী ঝড়, শিলা বৃষ্টি এবং আকস্মিক বন্যার হাত থেকে ফসল রক্ষা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কৃষকরা জানান, হবিগঞ্জ জেলাজুড়ে এ বছর ধান কাটা শ্রমিকদের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বিগত বছরগুলোতে রাজশাহী, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকরা হবিগঞ্জে এসে ধান কাটতেন। তবে এ বছর তারা আসেননি। যার কারণে শুধুমাত্র স্থানীয় শ্রমিকদের দিয়ে কাজ চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। তাছাড়া, যে অল্পসংখ্যক শ্রমিক কাজ করছেন তারাও বেশি মুজুরি দাবি করছেন। ফলে ঘরে ধান তোলা নিয়ে আশঙ্কা আরও বাড়ছে কৃষকদের।
নবীগঞ্জ উপজেলার লহরজপুর গ্রামের কৃষক মোজাহিদ আহমেদ জিহাদ বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে ধানের বিনিময়ে হাওরের জমির ধান কাটা হতো। কিন্তু এবার নগদ টাকা দিয়ে ধান কাটাতে হচ্ছে। একদিন শ্রমিক পেলে পরবর্তী চার-পাঁচ দিন পাওয়া যাচ্ছে না। শ্রমিকদের চাহিদামতো টাকা না দিলে তারা কাজ করতে রাজি হচ্ছেন না।
বানিয়াচং উপজেলার কাগাপাশা গ্রামের কৃষক অলিদ মিয়া বলেন, ‘স্থানীয় শ্রমিক দিয়ে হাওরের সব ধান কাটা সম্ভব নয়। জেলার বাইরে থেকে শ্রমিক না আসলে এই সংকট কাটবে না।
তবে এ বছর কোনো শ্রমিক সংকট নেই বলে জানিয়েছেন হবিগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান। তিনি সিলেট ভয়েসকে জানান, ‘এখন পর্যন্ত হাওরের ৪৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। কোনো ধরনের শ্রমিক সংকট নেই। একই সঙ্গে হারভেস্টার মেশিন দিয়েও ধান কাটা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এ বছর জেলার ৯টি উপজেলায় প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার ৮৭৪ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। সব মিলিয়ে ৯ লক্ষ ৮ হাজার ১৭২ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও ৬ লক্ষ ৫২ হাজার ৪৪৮ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
দৈনিক ইনাতগঞ্জ বার্তা/ ইকবাল
Leave a Reply