1. anjhonroy1@gmail.com : Anjhon Roy : Anjhon Roy
  2. admin@inathganjbarta.com : inathganjbarta :
  3. iqbalpress02@gmail.com : ইকবাল তালুকদার : ইকবাল তালুকদার তালুকদার
  4. manna820@gmail.com : আলী জাবেদ মান্না। : আলী জাবেদ মান্না।
  5. masudsikdar26@gmail.com : Masud Sikdar : Masud Sikdar
শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ১২:৪২ পূর্বাহ্ন

নড়াইলের মধুমতী নদীর অসময়ে ভাঙছে বিপাকে নদী পাড়ের মানুষ

  • আপডেটের সময়: বৃহস্পতিবার, ১ মে, ২০২৫
  • ৩৪ ভিউ

উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে।। নড়াইলের মধুমতী নদীর অসময়ে ভাঙছে বিপাকে নদী পাড়ের মানুষ। শুধুমাত্র বালু উঠানোর কারণে আমার বাড়ি ভাঙছে। আমি গরিব-অসহায়। অন্য কোথাও যে বাড়ি করব, আমার এক ফোঁটা জমি নেই। আমার স্বামী নাই একটা ছেলে নাই আছে চারটা মেয়ে। এখন আমি কোন উপায়ে কি করব? জানুয়ারি মাসে বৃষ্টি-বাদল কিছুই নাই। তখন আমার বসতভিটা ভাঙছে।

 

ভিটের বাকি অংশ এখনো ভাঙছে। বৃষ্টি এলেই একেবারে সব ভেঙে চলে যাবে৷ এখন আমার যাওয়ারও কোনো জায়গা নাই। রোববার বিকেলের দিকে কথা গুলো বলছিলেন লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর গ্রামের বৃদ্ধা শামসুন্নাহার বেগম (৬৫)। তাঁর বাড়ির সামনে মধুমতী নদী থেকে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হয়। সেই বালু স্তূপ করে রাখা হয় শামসুন্নাহারের বাড়ির পিছনে। বালু উত্তোলন করায় বাড়ির সামনে থাকা বাঁধের বস্তা নেমে চলে যায় নদীর মাঝে। আর স্তূপ করে রাখা বালুর পানির টানে নদীগর্ভে গেছে শামসুন্নাহারের ভিটে-মাটি।

 

শামসুন্নাহারদের গ্রাম কাশিপুর, তার পার্শ্ববর্তী মাকড়াইল, রামচন্দ্রপুর ও নওখোলা গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে—মধুমতী নদীতে পানি কম, ঢেউ নেই, তবুও চলছে ভাঙন। এসব এলাকার কিছু কিছু স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া বালুর বস্তা সরে গিয়ে নদীতে তলিয়ে গেছে, ফলে আগের বাঁধ ভেঙে পড়ে নতুন করে ভাঙছে নদীতীর। শামসুন্নাহারের মত অনেকের বসতভিটা, ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে নদীগর্ভে। ঝুঁকিতে রয়েছে ব্রিটিশ আমলে ১৯৪৫ সালে নির্মিত মাকড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আশেপাশের তিনটি স্কুল, কয়েকটি মসজিদ, আশ্রয়ণ প্রকল্প ও গ্রামীণ সড়ক।

 

স্থানীয়দের ভাষ্য, বহু বছর ধরে এ অঞ্চলে বর্ষা মৌসুমে মধুমতী নদী ভাঙলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড গত কয়েক বছর কিছু স্থানে বালুর বস্তা ফেলে বাঁধ দেওয়ায় ভাঙন কিছুটা কমেছিল। কিন্তু ড্রেজার মেশিন বসিয়ে ইজারাকৃত এবং ইজারা বহির্ভূত বিভিন্ন স্থান থেকে বালু উত্তোলন করায় বাঁধের অনেকাংশ ভেঙে পানিতে নেমে গিয়েছে। যার কারণে এ বছর অসময়ে ভাঙন শুরু হয়েছে।

 

নদীতীরের বাসিন্দা বৃদ্ধা মর্জিনা বেগম বলেন, আগে দুইবার নদীতে আমাগের বাড়ি ভাঙিছে, কষ্ট করে নতুন করে বাড়ি করিছি। মেলা জমি নদীতে চলে গেছে। এখনকার বাড়িও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়ছে।

 

মাকড়াইল গ্রামের ফজলুল মৃধা বলেন, আমাদের কয়েক একর জমি এই নদীতে গিলেছে। ভাঙন আতঙ্কে আমার এক ভাই ইতোমধ্যে ঘরবাড়ি ভেঙে অন্যত্র চলে গেছে। নদী থেকে যত্রতত্র বালু উত্তোলনের কারণে আমার বাড়ির সামনে দেওয়া বাঁধের বস্তা পানিতে নেমে ভাঙন শুরু হয়েছে। বাড়ির পাশের ব্রিটিশ আমলের স্কুলটিও হুমকির মধ্যে আছে।

https://10ms.io/OvfHB1 https://10ms.io/TvfH13

ভাঙন আতঙ্কে থাকা বাসিন্দারা বলেন, সম্প্রতি তাঁরা অভিযোগ দিলে ইজারা বহির্ভূত এলাকায় প্রশাসন বালু উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছে। এছাড়া নতুন বছরে ওই এলাকার বালুমহলের ইজারাও বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন, এতে স্থানীয়রা খুশি। তবে তাঁরা চাই, এটি যেন স্থায়ী হয়। আর কোনোভাবেই যেন কেউ বালু উত্তোলন করে তাঁদের ক্ষতি করতে না পারে। তাঁরা বলেন, বালু উত্তোলন বন্ধ হলেও, ভাঙন তো আর থেমে নেই, তাই ভাঙনকবলিত স্থানে বালুর বস্তা ফেলে সাময়িক প্রতিরোধ গড়ে তোলা হোক। আর স্থায়ী সমাধানের জন্য টেকসই বাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা করা হোক।

 

লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রিয়াদ বলেন, ইতোমধ্যে নদী ভাঙনের কারণে ওই এলাকার বালুমহলের ইজারা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷ এখন অবৈধভাবে আর কেউ বালু উত্তোলন করলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

নড়াইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অভিজিৎ কুমার সাহা বলেন, নিয়ম না মেনে বালু উত্তোলন করার কারণে নদীতীরে করা আমাদের প্রতিরক্ষা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বালু উত্তোলন ও ওই এলাকার বালুমহলগুলোর ইজারা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

 

দৈনিক ইনাতগঞ্জ বার্তা/ ইকবাল 

এই পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা অথবা ভিডিও কপি করা সম্পূর্ণ বেআইনি @2025
Desing & Developed BY ThemeNeed.com