ঘনিয়ে আসছে বৈশাখ মাস। প্রকৃতির বৈরী আবহাওয়ায় কখনো দেখা মিলছে রোদের। আবার কখনও বা ঝড়-বৃষ্টির। তবুও পর্যটকদের মন কাড়ছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভানুগাছ সড়কের পাশে থাকা কৃষ্ণচূড়া ফুল। একদিকে যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে, অন্যদিকে এর অপরূপ সৌন্দর্য মুগ্ধ হচ্ছেন পথচারী ও পর্যটকরা।
পর্যটন নগরী শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জের পথে-প্রান্তরে কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম ফুল এবং অপরূপ সৌন্দর্যে প্রতিনিয়ত মুগ্ধ হচ্ছেন পথচারী-দর্শনার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১ মে) বিকেলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, সড়কের ধারে কৃষ্ণচূড়া গাছে লাল রঙের ফুল ফুটেছে। শ্রীমঙ্গল থেকে কমলগঞ্জ যাওয়ার পথে রাস্তায় দেখা মিলে এসব নানা ফুলের।
শ্রীমঙ্গল থেকে ভানুগাছ সড়কের বধ্যভূমি ৭১’র সামনে থেকে শুরু করে রাস্তার দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো লাল রঙের অসংখ্য কৃষ্ণচূড়া গাছ। নজরকাড়া সৌন্দর্য সড়কের উভয় পাশের চা বাগানের সেই সবুজকে আরও বৈচিত্র্যময় করে তুলেছে। প্রকৃতিকে দিয়েছে নতুন মাত্রা।
রাস্তার মোড়ে কৃষ্ণচূড়ার সবুজ চিকন পাতা ও লাল কৃষ্ণচূড়া ফুল পথচারীদের মনকাড়ে। কৃষ্ণচূড়ার লাল, কমলা, হলুদ ফুল এবং উজ্জ্বল সবুজ পাতা এক অন্যরকম দৃষ্টিনন্দন শোভা। ঠিক এমনি প্রকৃতি অপরূপ লাল টুকটুকে কৃষ্ণচূড়ার ফুলের সাজে সাজিয়ে তুলেছে শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সড়ক।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কম-বেশি কৃষ্ণচূড়া গাছ আছে। এসব গাছে ইতিমধ্যে ফুল ফুটেছে। ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছে পথচারীরা।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দা মাসুম বলেন, ‘চায়ের রাজধানী খ্যাত পর্যটন নগরী শ্রীমঙ্গলের পথে-প্রান্তরে কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম ফুল এবং সোনালুর অপরূপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছেন দর্শনার্থীরা। এখন ফুলে পরিপূর্ণ গাছগুলো। রাস্তার ধারে কৃষ্ণচূড়ার গাছটিতে ফুল ফোটায় সড়কটি দেখতে অসাধারণ লাগে। তিনি বলেন, শহরের ভানুগাছ রোড, কালিঘাট রোডসহ উপজেলার বিভিন্ন অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার ও পথঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে চোখে পড়ছে কৃষ্ণচূড়া এবং সোনালু ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য।’
ঢাকা থেকে ঘুড়তে আসা শিক্ষার্থী সুমি জানান, ‘গাছে-গাছে বর্ণিল সব ফুলের সমারোহ। কোথাও টকটকে লাল কৃষ্ণচূড়া, কোথাও কমলা রঙের রাধাচূড়া। কোথাও আবার ছেয়ে আছে স্নিগ্ধ বেগুনি রঙের জারুল। পথ চলতে থমকে দাঁড়িয়ে এসব ফুলের দিকে কিছুক্ষণ চাননি, এমন মানুষ পাওয়া ভার হবে নিশ্চয়ই। আর মিষ্টি হলুদ রঙের সোনাঝরা সোনালুর ঝলমলে চাহনি গ্রীষ্মের রূপে যোগ করে দ্বিগুণ মাত্রা। তিনি বলেন, চায়ের রাজ্য এমনিতেই সুন্দর, এখন আলাদা করে আরও সুন্দর করে তুলেছে রাস্তার দুপাশের ফুলগুলো। এই ফুল প্রকৃতিকে সাজিয়ে তোলেছে নতুন রূপে।
প্রকৃতিপ্রেমী ও সাংবাদিক জামাল মিয়া বলেন, ‘কৃষ্ণচূড়া একটি জনপ্রিয় ফুল। নানা বৈশিষ্ট্যে দৃষ্টিনন্দন এ ফুলের কদর রয়েছে সব মহলেই। বিশেষ করে বাংলা কাব্য, সাহিত্য, সংগীত ও বিভিন্ন উপমায় কৃষ্ণচূড়া ফুলের কথা বিস্তরভাবে উঠে এসেছে। ফুলটির রং এত তীব্র যে অনেক দূর থেকেই চোখে পড়ে। হঠাৎ দূর থেকে দেখলে মনে হবে, কৃষ্ণচূড়া গাছে যেন লাল রঙের আগুন লেগেছে।
সুত্রঃ সিলেট ভয়েস
Leave a Reply