1. anjhonroy1@gmail.com : Anjhon Roy : Anjhon Roy
  2. admin@inathganjbarta.com : inathganjbarta :
  3. iqbalpress02@gmail.com : ইকবাল তালুকদার : ইকবাল তালুকদার তালুকদার
  4. manna820@gmail.com : আলী জাবেদ মান্না। : আলী জাবেদ মান্না।
  5. masudsikdar26@gmail.com : Masud Sikdar : Masud Sikdar
শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ১২:৩৯ পূর্বাহ্ন

নদীর পাড়ে বালুর ব্যবসা, বিপন্ন পরিবেশ-প্রকৃতি

  • আপডেটের সময়: শনিবার, ৩ মে, ২০২৫
  • ৩০ ভিউ

ডাকাতিয়া নদীর চর হিসেবে খ্যাত চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের এন্নাতলী কৃষি মাঠ। এক সময় নদীর দক্ষিণপাড়ের এ চরে ফসলি জমিতে বোরো ধানের পাশাপাশি ফলত বাঙ্গি, শসা ও বিভিন্ন ফল-সবজি। এখন সেই মাঠে বোরো ছাড়া অন্য কোনো ফসলের চাষাবাদ নেই।

 

কয়েক বছর ধরে নদীর পাড়ে বালু ব্যবসার কারণে অন্তত এক হাজার শতাংশ কৃষিজমি নদীর বুকে বিলীন হয়ে গেছে। এরই মধ্যে এন্নাতলীসহ নদী-সংশ্লিষ্ট গ্রামের বেশ কয়েকজন কৃষক তাদের জমি হারিয়েছেন। একই সঙ্গে পরিবর্তন হয়েছে নদীর গতিপথ। ভাঙন অব্যাহত থাকায় কৃষিজমির পাশাপাশি অনেকের ভিটেমাটি এখন অস্তিত্ব সংকটে।

অন্যদিকে, নদীপাড়ে জমিয়ে রাখা বালু বাতাসে উড়ে ফল ও শাকসবজি গাছের ওপর পড়ায় বেশকিছু কৃষিজমি চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নদীর উত্তর পাড়ে রয়েছে উপজেলা ভূমি অফিস (সহকারী কমিশনারের কার্যালয়)। পুরোনো এই অফিস ভবনটি এমনিতেই জরাজীর্ণ। তার ওপর প্রতিনিয়ত নদীর ভাঙনে ভবনটিও হুমকির মুখে।

ডাকাতিয়া নদীর উত্তর পাড় হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ৯নং ওয়ার্ড আলীগঞ্জ এলাকা এবং দক্ষিণ পাড় বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের এন্নাতলী গ্রাম। কয়েক বছর ধরে ডাকাতিয়া নদীর উত্তর পাড় ও আলীগঞ্জ এলাকায় বেশ কয়েকটি বালুমহাল গড়ে উঠেছে। মহালগুলো থেকে বালু ট্রাকে করে চলে যাচ্ছে নিজ ও পার্শ্ববর্তী জেলার সর্বত্র।

নৌপথে ট্রলারযোগে বালু পরিবহন করে ড্রেজারের মাধ্যমে বালুমহালে স্তূপ করে রাখা হয়। এর মধ্যে এন্নাতলী মাঠ সংলগ্ন উপজেলা ভূমি অফিসের পূর্ব পাশে ডাকাতিয়া নদীর পূর্বপাড়ে তিনটি ড্রেজার রয়েছে। এখানে প্রতিনিয়ত বালু আনলোড করা হয় এবং লোড ও আনলোডকৃত ১৫-২০টি ট্রলার নদীর পূর্বপাড়ে অবস্থান করে থাকে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বালুমহালের ট্রলারগুলো নদীর পশ্চিম অংশ দিয়ে চলাচল করে। এতে ট্রলারের ঘূর্ণায়মান পাখায় নদীর তলদেশের মাটি ক্ষয় হয়। ফলে নদীর পশ্চিম পাড় ভেঙে জমিগুলো নদীতে বিলীন হচ্ছে।

চলতি বছর নদীভাঙনে এন্নাতলী কৃষি মাঠের একমাত্র সেচ পাম্পটিও ভেঙে পড়ে। পরে কৃষকদের ক্ষোভের মুখে বালু ব্যবসায়ীরা নতুন করে সেচ পাম্পটি স্থাপন করে দিতে বাধ্য হন। ওই এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বালু ব্যবসায়ীদের দাপটে এতদিন কথা বলার সাহস পাননি। গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর ক্ষতিগ্রস্তদের কথা বলার সাহস ও সুযোগ হয়েছে। এরই মধ্যে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বা হচ্ছেন, তারা প্রতিবাদী হয়ে উঠেছেন।

 

তথ্যমতে, হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন এলাকায় এসব বালুমহালের ইজারা দেওয়া হয়েছে। এক বছরের (বাংলা সন ১৪৩২) জন্য পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ড এলাকার আলীগঞ্জ-এনায়েতপুর বালুঘাট ও সংযোগ বালুঘাটে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকায় সরকারি মূল্যে ইজারা বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। হিসাবমতে, প্রতিটি বালুমহাল গড়ে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকায় ইজারা দেওয়া হয়। অথচ এরই মধ্যে কোটি টাকারও বেশি মূল্যের জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। নদীভাঙন এখনো অব্যাহত আছে। অন্যদিকে, বিপন্ন হয়ে পড়ছে পরিবেশ-প্রকৃতি ও নদীর জলজ প্রাণী।

 

স্থানীয় নাগরিক সমাজের লোকজন বলছেন, কৃষিজমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে অসংখ্য পরিবার। বালু পড়ে এবং গভীরতা কম হওয়ায় ট্রলারের ঘূর্ণায়মান পাখায় নদীর পানি ঘোলাটে হয়ে যায়। এতে সূর্যের আলো পানির তলদেশে পৌঁছাতে পারে না। ফলে জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীর জীবনচক্র ব্যাহত হয়। মাছের প্রজনন কমে যায় এবং নদীর জীববৈচিত্র্য নষ্ট হয়।

 

এদিকে, গত ৪ এপ্রিল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারসহ এন্নাতলী গ্রামের কৃষকরা বালু ব্যবসায়ী কামাল হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে তাকে ড্রেজার সরানোর অনুরোধ করেন এলাকাবাসী। কিন্তু তিন সপ্তাহ পার হলেও তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। তাই বালুমহাল সরাতে গণস্বাক্ষরের প্রস্তুতি নিয়েছেন এলাকাবাসী।

 

এ বিষয়ে কথা হয় বালু ব্যবসায়ী কামাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার জমিতে বালুমহাল স্থাপন ও ড্রেজার বসিয়ে বালু ব্যবসা করছি। এখানে প্রায় ২০ কোটি টাকা ইনভেস্ট আমার। বললেই তো ব্যবসা সরিয়ে নেওয়া যায় না। যদি আমি একা ব্যবসা করতাম, তাহলে আমার বালুমহাল সরিয়ে নিতাম। আরও অনেকেই তো ব্যবসা করছে।

 

ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ওই গ্রামের বাসিন্দা মো. তাজুল ইসলাম নামের এক শিক্ষক বলেন, ‘এন্নাতলীর চর এক ফসলি মাঠ। এই এক ফসল দিয়েই গ্রামের অনেকের জীবন-জীবিকা। অথচ বালু ব্যবসার কারণে প্রায় এক হাজার শতাংশ জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। এতে অনেকেই জমি ও ভূমিহীন হয়েছেন।

 

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত জাহান কালবেলাকে বলেন, ‘বালুমহালের ইজারা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নদীতে ড্রেজার স্থাপন কিংবা ট্রলার রাখার বিষয়ে কোনো ইজারা বা বন্দোবস্ত দেওয়া হয়নি।

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইবনে আল জায়েদ হোসেন কালবেলাকে বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

দৈনিক ইনাতগঞ্জ বার্তা/ ইকবাল 

এই পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা অথবা ভিডিও কপি করা সম্পূর্ণ বেআইনি @2025
Desing & Developed BY ThemeNeed.com