1. anjhonroy1@gmail.com : Anjhon Roy : Anjhon Roy
  2. admin@inathganjbarta.com : inathganjbarta :
  3. iqbalpress02@gmail.com : ইকবাল তালুকদার : ইকবাল তালুকদার তালুকদার
  4. manna820@gmail.com : আলী জাবেদ মান্না। : আলী জাবেদ মান্না।
  5. masudsikdar26@gmail.com : Masud Sikdar : Masud Sikdar
মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ০৪:০৫ অপরাহ্ন

জামায়াতের দাঁড়িপাল্লার কী হবে

  • আপডেটের সময়: মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫
  • ১৫ ভিউ

রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন নিয়ে করা আপিলের শুনানি হবে আজ মঙ্গলবার। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চে এই শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। জামায়াতের আইনজীবীরা আশা করছেন, আপিল বিভাগের রায়ে দলটি নিবন্ধন ফিরে পেলে প্রতীক হিসেবে ‘দাঁড়িপাল্লা’ও ফিরে পাবে। প্রতীক ফিরে পেতে একটি আবেদনও করা হয়েছে। তবে সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দলীয় প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ বাতিল করায় সেটা আর ফেরত পাবে কি না, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে। তবে আইন বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, জামায়াতে ইসলামীর প্রতীক বাতিল করা হয় সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী। সেটা ছিল একটি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। তাই আপিল বিভাগের রায়ে জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার পাশাপাশি প্রতীকও ফিরে পাওয়া সম্ভব। কারণ, যে কোনো রায় প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর।

 

আইন বিশেষজ্ঞ ও নির্বাচন কমিশনের (ইসির) সাবেক আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক এ ব্যাপারে বলেন, ‘ফুলকোর্টের সিদ্ধান্ত একটি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। এটি কোনো রায় নয়। তাই জামায়াতের নিবন্ধন ফেরাতে যদি আপিল বিভাগ রায় দেন এবং সেই রায়ে প্রতীকও ফেরত দিতে বলেন, তাহলে জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধন ও প্রতীক দুটিই ফেরত পাবে। এতে কোনো সমস্যা নেই। কারণ, প্রশাসনিক আদেশের চেয়ে রায় অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর।

জানা যায়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ১৯৮৬ সালের পর থেকেই দলীয় প্রতীক হিসেবে দাঁড়িপাল্লা ব্যবহার করে আসছে। আর ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীকে রাজনৈতিক দল হিসেবে সাময়িক নিবন্ধন দেয় নির্বাচন কমিশন। পরের বছর বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির তৎকালীন মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মাওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন জামায়াতের ওই সাময়িক নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন।

 

ওই রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতকে দেওয়া নিবন্ধন সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে অবৈধ বলে রায় দেন হাইকোর্টের একটি বৃহত্তর (লার্জার) বেঞ্চ। সে সময় সংক্ষিপ্ত রায়ে আদালত জামায়াতকে নিবন্ধন দেওয়া আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে আদালত জামায়াতে ইসলামীকে সরাসরি আপিল করারও অনুমোদন দেন। এ রায় স্থগিতাদেশ চেয়ে জামায়াতের করা আবেদন একই বছরের ৫ আগস্ট খারিজ করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। পরে একই বছরের ২ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে জামায়াতে ইসলামী নিয়মিত আপিল করে।

২০১৩ সালে হাইকোর্টের ওই রায়ের পর দশম সংসদ নির্বাচনে দলটির অংশগ্রহণের সুযোগ ছিল না। আবার বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের অংশ হিসেবে তারা ভোটও বর্জন করে। এরপর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কেএম নূরুল হুদার কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। তৎকালীন ইসি সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমদের ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর দলটিকে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী নিবন্ধন দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু একটি মামলার রায়ে হাইকোর্ট ২০১৩ সালে দলটির নিবন্ধন প্রক্রিয়া অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেন। তাই নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করল।

এদিকে, নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণার পর ২০১৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীকে প্রতীক হিসেবে দাঁড়িপাল্লা বরাদ্দ না দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইসিকে চিঠি দেয় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। যদি কাউকে বরাদ্দ দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে ওই বরাদ্দ বাতিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়। সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় এক সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ইসিকে ওই চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে ‘দাঁড়িপাল্লা’ ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের মনোগ্রামে ব্যবহার করা হয়। ফলে ‘দাঁড়িপাল্লা’ অন্য কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত। ‘দাঁড়িপাল্লা’ ন্যায়বিচার তথা সুপ্রিম কোর্টের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার হওয়ার পাশাপাশি যদি কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তাহলে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।

 

 

চিঠিতে আরও বলা হয়, এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের উপস্থিতিতে ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ফুলকোর্ট সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহীত হয়েছে, ‘দাঁড়িপাল্লা’ ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের মনোগ্রামে ব্যবহৃত হবে। অন্য কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার না করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানানো হোক। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন ২০১৭ সালের ৯ মার্চ ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীক বাদ দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮ সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ করেছে ইসি। ফলে নির্বাচনে দল বা প্রার্থীর প্রতীক হিসেবে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বাদ হয়ে যায়।

 

 

এরপর ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীকের ওপর নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে ২০১৭ সালের ৮ জানুয়ারি জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান একটি বিবৃতি দেন। এতে বলা হয়, ১৯৮৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলীয় প্রার্থীদের জন্য প্রতীক হিসেবে ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীকটি বরাদ্দের জন্য আবেদন করলে আবেদন বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীকটি বরাদ্দ দেয়। ২০০৮ সালে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের সময় জামায়াতে ইসলামীকে ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীকসহ নিবন্ধিত করা হয়। নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে ‘দাঁড়িপাল্লা’ বরাদ্দ না দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, নিজ দলের প্রতীক নিয়ে ভোটে অংশ নিতে হলে ইসির নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫০টি। এজন্য দলগুলোর বিপরীতে ৫০টি প্রতীক সংরক্ষণ করেছে ইসি। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য ২৫টি প্রতীক সংরক্ষণ করেছে সংস্থাটি। সেখানে কোথাও দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নেই। আরও ৪৬টি দল নিবন্ধনের আবেদন জমা দেওয়ার সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে। নিবন্ধন অবৈধ এবং দলীয় প্রতীক না থাকায় দীর্ঘদিন দলটি স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে সরাসরি দলীয় ব্যানারে অংশ নেওয়ার সুযোগবঞ্চিত জামায়াত। এরই মধ্যে কোনো আইনজীবী উপস্থিত না থাকার অজুহাতে ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর জামায়াতের আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।

 

এরপর গত বছরের ১ আগস্ট বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার অঙ্গসংগঠনসহ জামায়াতে ইসলামীকে দল হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। পরে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়। এ ছাড়া আপিল বিভাগে নিবন্ধন মামলাটি পুনরায় শুনানির জন্য আবেদন করে জামায়াত। সে অনুযায়ী আপিল মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করে পুনরায় শুনানির সিদ্ধান্ত দেন সর্বোচ্চ আাদালত। আজ মঙ্গলবার ওই আপিলের ওপর শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।

 

জামায়াতের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, নিবন্ধন মামলার সঙ্গে দরখাস্ত আকারে প্রতীক ফিরে পেতে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়েছে। মঙ্গলবার নিবন্ধন ও প্রতীক বিষয়ে শুনানি হবে। আশা করছি, নিবন্ধনের সঙ্গে প্রতীকের বিষয়টিও আপিল বিভাগের রায়ের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হবে এবং প্রতীকসহ নিবন্ধন ফিরে পাবে জামায়াত। শিশির মনির আরও বলেন, দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বরাদ্দ না দিতে সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভার একটি রেজ্যুলেশন আছে। এই রেজ্যুলেশন একটি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। এর আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। তাই আপিল বিভাগ রায় দিলে ইসি কর্তৃক প্রতীক বরাদ্দ দিতে কোনো বাধা থাকবে না।

 

 

নিবন্ধন নিয়ে শিশির মনির বলেন, জামায়াতে ইসলামীকে নিবন্ধন দিয়েছিল সেনাসমর্থিত তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার। শুধু জামায়াতে ইসলামীই নয়, এর আগে তো বাংলাদেশে নিবন্ধিত কোনো রাজনৈতিক দলই ছিল না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৮ সালে আইন পাস করে সবাইকে বলল যে, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন নিতে হবে। নিবন্ধনের দরখাস্ত করার পর জামায়াতে ইসলামীকে সাময়িক নিবন্ধন দিল এবং বলল, একটু সংশোধন করতে হবে। পরে সেই সংশোধন করতে দেওয়া হয়েছে। এই সাময়িক নিবন্ধনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করা হয়। বৃহত্তর বেঞ্চে রিটের শুনানি হয়। শুনানি শেষে দুজন বিচারক বললেন যে, নিবন্ধন বাতিল, আর একজন বললেন, নিবন্ধন থাকবে। এর বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে। শুনানি অর্ধেক হয়ে গেছে। আশা করছি, বাকি শুনানিও মঙ্গলবার হয়ে যাবে। নিবন্ধনও ফিরে আসবে, সঙ্গে প্রতীকও।

 

 

নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার যুক্তি তুলে ধরে শিশির মনির বলেন, প্রথমত, সংবিধানের সঙ্গে জামায়াতের গঠনতন্ত্র সাংঘর্ষিক এবং গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ ১৯৭২-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তাদের যুক্তি হলো, গণতান্ত্রিক ক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামী অতীতে সব নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। প্রায় সব জাতীয় সংসদেই জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব ছিল। জামায়াতের গঠনতন্ত্র বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনোভাবেই অসাংবিধানিক নয়। কারণ অ্যাসোসিয়েশন করার অধিকার, দল গঠন করার অধিকার—এটা সব ব্যক্তির আছে।

 

 

দ্বিতীয়ত, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে—এমন একজন ব্যক্তির (সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে, তার দলের গঠনতন্ত্র যদি বিশ্লেষণ করেন তাহলে সেখানে দেখবেন, জামায়াতের গঠনতন্ত্র যে কারণে তিনি দূষিত বলছেন, এর থেকে তার নিজের দলের গঠনতন্ত্র অনেক বেশি দূষিত। তার দল অর্থাৎ তরীকত ফেডারেশনের গঠনতন্ত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তারা আসলে কোনোভাবেই তাদের জায়গা থেকে জামায়াতের গঠনতন্ত্র চ্যালেঞ্জ করার এখতিয়ার রাখে না। কারণ উচ্চ আদালতের তিনজন বিচারপতির মধ্যে একজন বিচারপতি রায়ে উল্লেখ করেছেন, রিটকারী সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীর এ ধরনের রিট করার লোকাস স্ট্যান্ডি (এখতিয়ার) নেই। তিনি জামায়াতের নিবন্ধন নিয়ে কথা বলতে পারেন না। কারণ তার নিজের দলের গঠনতন্ত্র ত্রুটিতে পরিপূর্ণ।

 

 

তৃতীয়ত, জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন জামায়াতকে প্রথমে রেজিস্ট্রেশন দিয়ে গঠনতন্ত্রের কিছু জায়গায় সংশোধন করতে বলেছে। সংশোধন প্রক্রিয়া চলমান থাকা অবস্থায় নিবন্ধন বাতিলের রায় হয়েছে, তাহলে তো দলটিকে গঠনতন্ত্র সংশোধন করতে দেওয়া হলো না। বরং নির্বাচন কমিশনের কাজের মধ্যে এখতিয়ারবহির্ভূতভাবে কমিশনের কাজকে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে।

চতুর্থত, ১৯৯২ সালের আইনে বলা হয়েছে, যখন সংবিধান কর্তৃক কোনো ব্যক্তিকে অধিকার দেওয়া হয় এবং তার সঙ্গে রেস্ট্রিকশন দেওয়া হয়, তাহলে সংবিধান কর্তৃক যে অধিকার দেওয়া হয়েছে, সেটা প্রাধান্য পাবে। সংবিধানে বলা হয়েছে, সংগঠন করা, দল গঠন করা, এটা একটা সাংবিধানিক অধিকার। তাই যদি হয়, তাহলে কোনো এক জায়গায় যদি রেস্ট্রিকশন থেকে থাকে, সেই রেস্ট্রিকশনকে অবশ্যই স্ট্রিকলি দেখার সুযোগ নেই।

 

 

পঞ্চমত, এটা একটা সার্টিফায়েড আপিল। সার্টিফায়েড আপিল মানে হলো, হাইকোর্ট বিভাগ যখন মামলাটি নিষ্পত্তি করেছেন, তখন হাইকোর্ট ডিভিশন নিজেই সার্টিফিকেট দিয়ে বলেছেন, এই মামলায় সংবিধানের জটিল ব্যাখ্যা জড়িত। জটিল ব্যাখ্যা জড়িত হওয়ার কারণে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে সরাসরি আপিল করা হবে। লিভ টু আপিল হওয়ার সুযোগ নেই। যদি তাই হয়, তাহলে হাইকোর্ট ডিভিশন স্বীকার করছেন, এই মামলাটি হলো এমন এক মামলা, যে মামলায় সংবিধানের বিস্তর ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন আছে। অর্থাৎ হাইকোর্ট নিজেই স্বীকার করেছেন, এটা সুপ্রিম কোর্টে পূর্ণাঙ্গ সেটেলড হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু যেহেতু পূর্ণাঙ্গভাবে সেটেলড হয়নি। কারও সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিতে হলে এভাবে তো কেড়ে নেওয়া যায় না।

সুত্রঃ কালবেলা 

দৈনিক ইনাতগঞ্জ বার্তা/ ইকবাল 

এই পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা অথবা ভিডিও কপি করা সম্পূর্ণ বেআইনি @2025
Desing & Developed BY ThemeNeed.com